আমার অবস্থান- নাসির আব্দুল্লাহ

আমার অবস্থান- নাসির আব্দুল্লাহ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের নির্বিচারে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা বিনা প্রতিবাদ-প্রতিরোধে অব্যাহতভাবে চলছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় তিনগুণ বেড়ে গেছে সীমান্ত হত্যা। অথচ স্বাধীন –সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকার কিংবা অন্যান্য সক্রিয় রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর এ নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই বলেই মনে হচ্ছে। কেউ কেউ ক্ষীণস্বরে প্রতিবাদ করছেণ কিন্তু সরকারের মন্ত্রী এবং সরকারদলীয় নেতারা খোলাখুলি এ হত্যার পক্ষে যুক্তি যোগাড় করছেন এবং জনগণকে তা গিলানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু এ অনির্বাচিত সরকারে জনগণের আস্থা নেই ফলতঃ সরকারদলীয় নেতা-মন্ত্রীদের এরকম কুযুক্তিকে জনগণ অনেক আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে।
সীমান্তে লাশের পর লাশের সারি যখন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে আর স্বামী-পুত্রের গুলিবিদ্ধ লাশ হাতে বিধবা আর সন্তানহারা মা যখন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি তখন বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি আর ভারতের মদদপুষ্ট সরকারের নির্লজ্জ দালালিই কি আমাদের বর্তমান আর ভবিষ্যত?
না, আমি এ বর্তমানকে ঘৃণা করি আর এ ভবিষ্যতের পথে বাগড়া দিতে চাই।
না, আমি এ হত্যার প্রতিবাদ করতে চাই। জনগণের মনে সাম্রাজ্যবাদী ভারতের বিরূদ্ধে প্রতিরোধের যে শিখা তা জ্বালিয়ে রাখতে চাই। আমি চাই আমার বুকে যে ক্ষত তা সবার ক্ষতে পরিণত হোক। আমার বুকে যে আগুন জ্বলে তা বাংলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক। আমার প্রতিবাদকে জনগণ প্রতিরোধের দিকে নিয়ে যাক। 
না, সোজা কথায় আমি চাই সকল সীমান্ত হত্যার বিচার হোক। সীমান্তে হত্যা বন্ধ হোক। আর যদি ভারতের পদানত সরকার এ দুটি দাবিকে বাস্তবায়নের যোগ্যতা না রাখে তবে অবশ্যই জনগণকে সীমান্তের এপারে-ওপারে দু’ফ্রন্টেই প্রতিবাদে-প্রতিরোধে নামার জন্য আহবান জানাই। 
না, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে এ হত্যার বিচার চাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আমি এ প্রতিবাদে শামিল হতে আহবান জানাই। আমার অবস্থান আর দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে আপনারা আপনাদের অবস্থান থেকে আরো শক্তিশালীভাবে প্রতিবাদে শামিল হোন। এ হত্যার মিছিল আমাদের রুখতেই হবে। সম্প্রসারণবাদী ভারতের বন্দুকের নলকে আমাদের থামাতেই হবে।
না, আমাদের জনগণের মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে একটা স্বাধীন দেশ পেলেও আমাদের মুক্তি তো আসেইনি বরং আমাদের স্বাধীনতাটা-সার্বভৌমত্ব ও কেড়ে নেয়া হয়েছে। জনগণকে আবার এ রাষ্ট্রের মালিকানা দাবি করতে হবে। পিন্ডিকে আমরা যেমন রুখে দিয়েছি তেমন দিল্লিকেও রুখে দিতে হবে। আমার অবস্থান জনগণের কাছে এ রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য অবস্থান। ভারতের গোলামি থেকে এ দেশকে মুক্ত করার জন্য আমার অবস্থান।
না, আমি চাই বাংলাদেশের জনগণ ভারত রাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী মনস্তত্বকে উপলব্দি করুক। লাশগুলোর দিকে ফিরে তাকিয়ে জনগণ অনুধাবন করুক আমাদের মুক্তির লড়াইটা আরো অনেকদিন চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের স্বাধীনতার স্বাদ নিতে আমাদেরকে ভারত এবং তার তাবেদার শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে-প্রতিরোধে সদা চঞ্চ্বল থাকতে হবে।
না, আমি এ হত্যা বরদাস্ত করবনা। একা হলেও আমি আমার প্রতিবাদী অবস্থান অব্যাহত রাখবো। আপনাদের কাছে আমি  আমার অবস্থান খোলাসা করেছি। এ লড়াইটা ছাত্র-জনতার। আর লড়তে লড়তেই এ লড়াই আমাদের জিততে হবে।
‘বাঁধভাঙ্গা সব আসুক রাগ কন্ঠে মোদের স্লোগান থাক’- আরে! দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা ! 

Comments